স্টাফ রিপোর্টার, ২৩বৈশাখ (৬ মে):
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, পাকিস্তানিরা যেভাবে
এদেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। যার প্রেক্ষিতে
বাংলাদেশের প্রায় এক কোটি লোক মাতৃভূমি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতে চলে
গিয়েছিলেন। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও ভারতের জনগণ
যেভাবে আমাদের আশ্রয় দিয়েছিল, নিরাপত্তা দিয়েছিল, থাকার ব্যবস্থা করেছিল, সেই
চিত্র যারা সচক্ষে দেখেননি তাদের বোঝানো কঠিন। বরেণ্য চিত্রশিল্পী রঘু রাই-এর
‘রাইজ অভ্ এ নেশন’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে মানুষের নিদারুণ
কষ্ট, জীবন বাঁচানোর যে আকুতি, সেটি ফুটিয়ে তুলেছেন। তিনি বলেন, এ প্রদর্শনীর
মাধ্যমে অত্যাচারের চিত্র কিছুটা হলেও নতুন প্রজন্ম জানতে পারবে এবং গণহত্যার
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির ক্ষেত্রে এ চিত্রকর্ম সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
মন্ত্রী গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ মিলনায়তনে ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে দুর্জয় বাংলাদেশ
ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় বিশ্বখ্যাত ভারতীয় আলোকচিত্রী রঘু রাই-এর ‘রাইজ অভ্
এ নেশন’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির
বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীরা আমাদের মহান পবিত্র ধর্মকে কলঙ্কিত
করে, অপব্যাখ্যা করে, ধর্মে যা আছে তার বিপরীত ব্যাখ্যা করেছে। এগুলো তারা
মৌখিকভাবে বলেনি, লিখিত ফতোয়া দিয়েছে। পাকিস্তান না থাকলে ইসলাম ধর্ম থাকবে
না। তারা ভাষা আন্দোলনের সময়ও একই কথা বলেছিল, বাংলা যদি রাষ্ট্রভাষা হয়
ইসলাম ধর্ম থাকবে না। বর্তমান সময়েও অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিলুপ্তির পথে। এ
ধরনের উদ্যোগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষায় ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু-এর
সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি
ডা. সারওয়ার আলী, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন-এর উপাচার্য ড. রুবানা হক,
স্কয়ার গ্ৰুপের পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার
হোসেন এবং দুর্জয় বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা দুর্জয় রহমান বক্তৃতা
করেন।
পরে মন্ত্রী চারুকলা অনুষদের জয়নুল আবেদীন গ্যালারিতে রঘু রাই-এর একক
চিত্রপ্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। প্রদর্শনীতে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তোলা ৫২ টি
চিত্রকর্ম স্হান পায়।