স্টাফ রিপোর্টার,ঢাকা,অভিবাসন সংক্রান্ত অপতথ্য রোধে বাংলাদেশ-ইতালি একসঙ্গে কাজ করবে বলে
জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত অ্যান্তিনিও আলেসান্দ্রোর
সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।
প্রতিমন্ত্রী এ সময় সাংবাদিকদের বলেন, অভিবাসনের বিষয়ে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে
আলোচনায় যেটি উঠে এসেছে তা হলো, একটা গোষ্ঠী যারা মানবপাচারকারী তারা সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের অপতথ্য ছড়িয়ে মানুষকে লোভে ফেলে। মিথ্যাচার করে
ফেইক নিউজের মাধ্যমে। লোভে পড়ার ফলে মানুষ ফাঁদে পড়ে অনেক সমস্যার মধ্যে পড়ে যায়,
এমনকি মৃত্যুর মুখোমুখি হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যতো অপতথ্য, ফেইক নিউজ ও
গুজব আছে, শুধু অভিবাসনের ক্ষেত্রে যারা মানবপাচারের শিকার হয় তারাই নয় বরং বিভিন্ন
ক্ষেত্রের মানুষরা এগুলোর শিকার হয়। এ বিষয়ে কীভাবে বাংলাদেশ-ইতালি একসঙ্গে কাজ
করতে পারে সে বিষয়ে ইতালির রাষ্ট্রদূতের সাথে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে রাষ্ট্রদূত
একমত হয়েছেন যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপতথ্যের প্রচার যেভাবে হয়, দিনশেষে মানুষ ঝুঁকির
মধ্যে পড়ে। সেটা অভিবাসনের ক্ষেত্রে বা অন্য যেকোনো ক্ষেত্রেই হোক। এ বিষয়ে দুই দেশ
কীভাবে একসাথে কাজ করতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তাদের আইন-কানুন যেগুলো
আছে সেগুলো তারা শেয়ার করবে। অপতথ্য রোধ করার জন্য আমরা যে উদ্যোগ নেবো সেগুলো
তারা সমর্থন করবে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, মানবপাচার অপতথ্যের একটা ফলাফল। এই ধরনের
ফলাফলের মধ্যে যাতে মানুষ না পড়ে। অপতথ্য শুধু রাজনীতি বা দলীয় রাজনীতির বিষয় না।
সমাজের বিভিন্ন স্তরের সাধারণ মানুষ অপতথ্যের শিকার হয়ে বিপদে পড়ে। গ্রামে-গঞ্জে
অনেক নারী-শিশু অপতথ্যের শিকার হয়ে বিপদে পড়ে। অনেক সাধারণ মানুষ অপতথ্যের শিকার
হয়ে অবৈধ অভিবাসনের রাস্তা বেছে নিয়ে বিপদে পড়ে। যে কারণে সঠিক তথ্যের জায়গায়
আমাদের সাথে আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র এবং দেশের মধ্যে অংশীজন যারা আছেন তাদের মধ্যে
একটা সমঝোতা থাকা দরকার।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইতালির একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধ ইতিহাস আছে।
বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতির অন্যান্য ক্ষেত্রে পারস্পরিক বিনিময়ে
হতে পারে। ইতালির ভেনিস শহরে বড় ধরনের উৎসব হয়। সেখানে বাংলাদেশের
প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে কীভাবে আমরা বাংলাদেশকে তুলে ধরতে পারি সে বিষয়েও ইতালির
রাষ্ট্রদূত আগ্রহ দেখিয়েছেন এবং সে বিষয়ে তারা সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন।
বিশ্ব গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অবস্থান নিয়ে সাংবাদিকদের এক
প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ)-এর সূচক
প্রকাশের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। কিন্তু এই সূচকের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হয়ে
যাবে যদি পদ্ধতিগত দুর্বলতা থাকে। আমি তাদের অনুরোধ করবো তারা যাতে
বিশ্বাসযোগ্যতার স্বার্থে পদ্ধতিগত দুর্বলতা উতরে যেতে পারে এবং তথ্য নেওয়ার পর তা
যাচাই করে। আরএসএফ-এর এ বছরের প্রতিবেদন এসেছে গতবছরের কার্যক্রমের ওপর।
তাদের নির্ণয় প্রক্রিয়াতে তারা কোনো পরিবর্তন আনেনি। দশ-বারো জন মানুষের একটা
মতামত নিয়ে সূচক তৈরি করলে, এটা গোটা দেশের চিত্র হতে পারে না। এ মতামতগুলো কার
কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে, কত জনের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে, সেখানে কারা আছে এটার কোনো
স্বচ্ছতা সেখানে নেই। আরএসএফ এর সূচক তৈরির পদ্ধতি খুবই দুর্বল একটা পদ্ধতি যার
মাধ্যমে প্রকৃত চিত্রের প্রতিফলন হয় না। আরএসএফ এর এ ধরনের পদ্ধতিতে সূচক
প্রকাশ গণমাধ্যমের পরিবেশের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে পারছে না। এ পদ্ধতিতে গলদ আছে,
ভুল আছে। সেটা আমরা তাদের কাছে তুলে ধরবো।